ছোট স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান

ছোট স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ গ্রামে স্বামী আলমগীর হোসেনের (৫০) বাড়ির উঠানে অবস্থান নিয়েছেন এক নারী। শিল্পী আক্তার (২৫) নামের ওই নারী গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন। স্ত্রীর অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত তিনি ওই বাড়িতেই থাকবেন, অন্যথায় আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন।
আলমগীর ওই গ্রামের মৃত উফাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রির ঠিকাদার। আর একই গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে শিল্পী আক্তার পেশায় একজন পোশাককর্মী।
শিল্পী জানান, তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। তাঁর বাবা একজন কৃষক। তিনি পোশাক কারখানায় চাকরি করে পরিবারের খরচ বহন করেন। তাঁর আগে বিয়ে হয়েছিল। পরে স্বামীর সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সেই ঘরে তাঁর একটি মেয়ে আছে। এদিকে প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর গ্রামের আলমগীরের সঙ্গে তিন বছর আগে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বছর আগে তাঁরা গোপনে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কথা কাউকে না জানিয়ে গোপনে তাঁরা শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যান। বিভিন্ন সময় আলমগীর তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। কিছুদিন আগে শিল্পী তাঁর কাবিনের কাগজ চাইলে আলমগীর তাঁকে তা দিতে রাজি হননি এবং শিল্পীকে বলেন কাগজ পুড়িয়ে ফেলেছেন। এ অবস্থায় গত ১১ এপ্রিল তাঁরা নিকাহ রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গিয়ে বিয়ে করেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে শিল্পী আক্তার আলমগীরের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর দাবি আদায় করতে গেলে আলমগীরের বড় বউ তাঁর মাথায় আঘাত করেন এবং ঘরে তালা দিয়ে অন্যত্র চলে যান।
শিল্পী আক্তারকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আলমগীর ধার নেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। বিয়ে করেছেন। কিন্তু ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। পাওয়া টাকা চাইলে টাকাও দেন না।
শিল্পী বলেন, ‘আমার ভরণপোষণ দিতে হবে এবং আমার টাকা ফেরত দিতে হবে। আমার টাকা না দিলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’
এ সময় আলমগীরের ভাই ও ভাগ্নে মিলে শিল্পীকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, ‘বউ বললেই কি বউ হওয়া যায়? প্রমাণ দেখাও। মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেই ঝামেলা শেষ হয়ে যাবে।’
শিল্পী বিয়ের প্রমাণ দেখাতে চাইলে তখন কেউ তাঁর দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। এদিকে আলমগীর তাঁকে ফোন করে হুমকি দিতে থাকেন। গতকাল রাতে তিনি বাড়িতে এলেও শিল্পীকে ঢুকতে দেননি। সারা রাত বাড়ির বাইরে ছিলেন শিল্পী।