কাউন্সিলর রাজীব ও মনজুর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র

রাজধানীর ভাটারা ও ওয়ারী থানায় দায়ের করা অস্ত্র আইনের মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ময়নুল হক মনজুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি অভিযোগপত্র উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপন শেষে ওয়ারী থানায় দায়ের করা অস্ত্র আইনের মামলায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ময়নুল হক মনজুর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইলিয়াস মিয়া।
ওয়ারী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) তাহেরা বানু বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করা হলে আজ ঢাকার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিচারক মামলাটি বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা অস্ত্র আইনের মামলায় উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম ‘দেখিলাম’ বলে আদেশ দিয়েছেন। তবে আগামী ৩ ডিসেম্বর এ অভিযোগপত্রটি এই বিচারকের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন ভাটারা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) লিয়াকত আলী।
গত ২০ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে কাউন্সিলর রাজীবকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যঅটালিয়ন (র্যাব)। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, মদ ও টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র্যাব-১। এরপর ২১ অক্টোবর রাতেই রাজীবকে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
এদিকে গ্রেপ্তারের পরে রাজীবকে তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায় নিয়ে যায় র্যাব। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা পুরো বাসায় চলে র্যাবের তল্লাশি। বাসায় ব্যাপক তল্লাশির পর কাউন্সিলর রাজীবকে নিয়ে যাওয়া হয় বাসার অদূরেই তাঁর কার্যালয়ে।
সেখানে ঘণ্টাব্যাপী অভিযান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অভিযানে থাকা র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘তাঁর বাড়িতে ও অফিসে কোনো কিছুই আমরা পাইনি। আমরা যা বুঝতে পেরেছি, বাড়িতে তাঁর আর্থিক লেনদেনের যে ডকুমেন্টগুলো ছিল, চেকবই থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়, এগুলো এরই মধ্যে তিনি সরিয়ে ফেলেছেন। এবং তাঁরই এক স্টাফের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে চেকবইগুলোর কিছু নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আমরা দেখেছি, ব্র্যাক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিনি পাঁচ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন।’
সারোয়ার আলম আরো বলেন, ‘তিনি আসলে কাউন্সিলর হওয়ার পর পরই ২০১৬ সালে তিনটি কোম্পানি খুলেছেন—সিলিকন, এক্কা ও নাইমা এন্টারপ্রাইজ। এই তিন প্রতিষ্ঠানের নামে আসলে তিনি জমি দখল করেছেন। এ অপরাধগুলো করতে গিয়ে তিনি যে লোকদের ব্যবহার করেছেন, আত্মীয় এবং অনাত্মীয়, প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এদিকে ক্যাসিনোর সঙ্গে রাজীবের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছে র্যাব।
এর আগে পাশের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর বাসা থেকেও বিপুল টাকা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে গত ১ নভেম্বর অস্ত্র ও মাদক আইনের পৃথক দুই মামলায় কাউন্সিলর মনজুর ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। আগের দিন ৩১ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে র্যাব তাঁকে আটক করে।