কক্সবাজারে একদিনে সর্বোচ্চ ৯৬ জন করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ৩

কক্সবাজারে আজ সোমবার সর্বোচ্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে জেলার ৯০ জনসহ ৯৬ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
অপরদিকে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে একজন নারী সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের। দুজন শহরের বাসিন্দা। তাঁরা পেশায় ব্যবসায়ী।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ২৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৯৬ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে চারজন পুরোনো রোগীর ফলোআপ রিপোর্ট। বাকি ৯২ জনই নতুন করোনা রোগী। এর মধ্যে দুজন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বাকি ৯০ জনই কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। এতে পাঁচ রোহিঙ্গার পজিটিভ রিপোর্টও আছে। ৯০ জনের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলার রয়েছে ৩৫ জন। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আজ ভোর ৫টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালের আইসিইউতে মো. এছারুল হক নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি কক্সবাজার শহরের পূর্ব পাহাড়তলি ইছুলুরঘোনার বাসিন্দা। তিনিসহ তাঁর পরিবারের তিন সদস্য করোনায় আক্রান্ত।
মো. এছারুল হকের করোনা লক্ষণ দেখা দিলে নমুনা জমা দেন। গতকাল রোববার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। রাতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ মৃত্যুবরণ করেন।
আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান কক্সবাজার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম নুনিয়ারছড়ার তরুণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ করিম (৩০)। তিনি ওই এলাকার শামসুল আলম ওরফে শামসু মাঝির ছেলে এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক।
করোনার উপসর্গ নিয়ে গত শনিবার করিমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রোববার সকালে হাসপাতালের আইসিউতে নেওয়া হয়। সোমবার সকালে তিনি মারা যান।
প্রথম দিক থেকেই করিমের অবস্থা খুব সংকটাপন্ন ছিল। সদরে ভেন্টিলেটর না থাকায় তাঁকে চট্টগ্রাম রেফার করা হয়েছিল। স্বজনেরা নিজ দায়িত্বে এখানে রেখে দেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
একই দিন বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যান মনোয়ারা বেগম (৫৫) নামের এক নারী। তিনি টেকনাফ পৌরসভার ডেইলপাড়া এলাকার মোহাম্মদ কবিরের স্ত্রী। তিনদিন আগে তাঁর করোনার লক্ষণ দেখা দিলে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হলে রোববার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সোমবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া দুজনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মোহাম্মদ শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, ১ জুন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৭৯৮ জন। যার মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছে ১৫১ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।
আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৫৪৩ জন।
জেলায় মোট হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে তিন হাজার ১৯১ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়েছে ৮৩৭ জন। কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে দুই হাজার ১৭৫ জন।