Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

প্রাণোচ্ছল হাসিতে তিশা

মিষ্টি হাসিতে তটিনী

সাদা-কালোয় সাদিয়া আয়মান

ঝলমলে ঐন্দ্রিলা সেন

শহরের জানালায় স্নিগ্ধ প্রভা

দ্যুতি ছড়াচ্ছেন সারিকা

চমকে দিলেন চমক

রাজকীয় লুকে রুক্মিণী

‘সাইয়ারা’র নায়িকা অনীত পাড্ডা

নতুন ঝলকে সাবিলা

ভিডিও
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২১৮
কাজিন্স পর্ব ২৪
কাজিন্স পর্ব ২৪
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ৫৩
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ৫৩
আলোকপাত : পর্ব ৭৮৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৮৭
ছাত্রাবাঁশ পর্ব ৪৪
ছাত্রাবাঁশ পর্ব ৪৪
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৪২৪
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ৪৯
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ৪৯
রাতের আড্ডা : পর্ব ১৮
রাতের আড্ডা : পর্ব ১৮
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩১২
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬৬
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬৬
ড. নাদির জুনাইদ
১২:১৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
আপডেট: ১৩:১৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
ড. নাদির জুনাইদ
১২:১৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
আপডেট: ১৩:১৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
আরও খবর
ডালাস বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব ৪-৬ আগস্ট
‘মাইক’ চলচ্চিত্রটি ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে : হানিফ
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা উঠল
সিলেট চলচ্চিত্র উৎসবে ৩ হাজারের বেশি চলচ্চিত্র জমা
সিনেমার ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে...

জহির রায়হান

প্রতিবাদী এক চলচ্চিত্রকারের বিষাদময় অন্তর্ধান

ড. নাদির জুনাইদ
১২:১৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
আপডেট: ১৩:১৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
ড. নাদির জুনাইদ
১২:১৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
আপডেট: ১৩:১৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬

৪৪ বছর আগে এই দিনে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিখোঁজ বড়ভাইয়ের সন্ধানে মিরপুরে গিয়ে আর ফিরে আসেননি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের সবচেয়ে বরেণ্য চলচ্চিত্রকারদের একজন জহির রায়হান। ১৯৭২ সালের সেই জানুয়ারিতে জহির রায়হানই ছিলেন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রকার। তিনি সুসাহিত্যিকও ছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রকার হিসেবে তাঁর সাফল্য অতিক্রম করে গিয়েছিল তাঁর সাহিত্যিক পরিচয়কে। ১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তানিদের শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রতিবাদের ফলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল, সেই অশান্ত বর্তমান সময়ের মুখোমুখি হওয়ার চেষ্টা সেই সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে তৈরি চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক সময় ছিল রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদমূখর, অথচ সেই সময়ের তৈরি বাংলা চলচ্চিত্রে বিদ্যমান নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা ছিল অনুপস্থিত। সামরিক শাসনের কর্তৃত্বমূলক মনোভাবের কারণেই হয়তো সেই সময়ের বাঙালি পরিচালকরা সমকালীন গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যা নিজেদের চলচ্চিত্রে তুলে ধরার ঝুঁকি নেওয়ার সাহস দেখাননি।

এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছিল জহির রায়হানের মাধ্যমেই। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যত্থানের পর পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যখন আরো জটিল হয়ে উঠতে থাকে, সেই অনিশ্চিত পরিবেশে জহির রায়হান অনুভব করেছিলেন সমকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতা উপেক্ষা করে একজন সচেতন চলচ্চিত্রকার এই সময়ে ছবি নির্মাণ করতে পারেন না। এই উপলব্ধি থেকেই তিনি তৈরি করেন তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি ‘জীবন থেকে নেয়া’ (১৯৭০)। পুরো ষাটের দশকে সমকালীন সমস্যাকেন্দ্রিক আর রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে যে ব্যর্থতা বাংলা ছবিতে দেখা গিয়েছিল, জীবন থেকে নেয়ার শক্তিশালী রূপ সেই ব্যর্থতার পরিবর্তন এনে নতুন এক বাংলা ছবি দেখার সুযোগ সৃষ্টি করে দর্শকদের জন্য। সামরিক শাসনের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে প্রতিকূল এক সময়ে জহির রায়হান রূপকধর্মী এক কাহিনীর মাধ্যমে যেভাবে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা তুলে ধরেছিলেন, তেমন সাহসী ছবি বিশ্বেই খুব কম নির্মিত হয়েছে। এই ছবির চলচ্চিত্র ভাষা বা নির্মাণশৈলীও ছিল আকর্ষণীয়। পশ্চিম বাংলার বিখ্যাত চলচ্চিত্রকাররা যেমন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন অনেক অনুকূল পরিবেশে রাজনৈতিক ছবি তৈরি করতে পেরেছিলেন। কারণ ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে পশ্চিম বাংলায় রাষ্ট্রবিরোধী নকশাল আন্দোলন চলাকালেও সরকার চলচ্চিত্রকারের নিজস্ব মতের প্রতি অসহিষ্ণু ছিল না। পূর্ব পাকিস্তানে জহির রায়হান সেই সুযোগ পাননি। কিন্তু চিন্তাশীলতার সাথে একটি রূপকধর্মী কাহিনী ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি সেন্সরের বাধা এড়িয়ে রাজনৈতিক সমালোচনা প্রদানে সক্ষম হয়েছিলেন।

জীবন থেকে নেয়ায় আমরা দেখতে পাই ঢাকার রাস্তায় মানুষের প্রতিবাদী মিছিল আর সেই মিছিল নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের সত্যিকারের ছবি, বারবার দেখানো হয় ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক শহীদ মিনার আর ২১ ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে বহু মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য, ২১ ফেব্রুয়ারির বিশেষ গান আর সেই সুর আমরা শুনতে পাই বিভিন্ন দৃশ্যে। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে সংহত হওয়া বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা আরো দৃঢ় করার ক্ষেত্রে এই দৃশ্যগুলো জোরালো ভূমিকা রাখবে তা বলা বাহুল্য। তাই কোনো চলচ্চিত্রে এই ধরনের দৃশ্যের ব্যবহার পাকিস্তানি প্রশাসন মেনে নিতে পারেনি। বিভিন্ন দৃশ্য ছবি থেকে বাদ দেওয়ার জন্য জহির রায়হানকে বাধ্য করা হয়। এবং সেই দৃশ্যগুলো বাদ দিয়ে ছবি নির্মিত হওয়ার পরও প্রশাসন ছবিটি বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। বোঝা যায়, প্রতিবাদী এই ছবির বিষয়বস্তু তৎকালীন সরকারের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তি সৃষ্টি করেছিল। পরে ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে এই ছবি দেখার জন্য সাধারণ মানুষের ক্ষুব্ধ আন্দোলনের পর ছবিটি প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়। বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসেই জীবন থেকে নেয়া তাই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই ছবি একটি দেশের মুক্তিসংগ্রামের জন্য মানুষের মধ্যে প্রয়োজনীয় চেতনা আর সাহস সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছিল।

ঠিক এক বছর পরই বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম শুরু হলে জহির রায়হান ভারতে চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচিত্র বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকাররা তৈরি করেন তার সবকটির প্রযোজকই ছিলেন জহির রায়হান। এর মধ্যে দুটি তথ্যচিত্র তিনি পরিচালনা করেন যার একটি ছিল তাঁর বিখ্যাত কাজ ‘স্টপ জেনোসাইড’। অত্যন্ত সুনির্মিত এই তথ্যচিত্র আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের প্রতি এবং তার বিরুদ্ধে বাঙালিদের সাহসী প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টিতে জোরালো ভূমিকা রাখে। যুদ্ধকালীন সেই সময়ে তথ্যচিত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য না থাকার পরও জহির রায়হান নির্মিত স্টপ জেনোসাইড ছিল নান্দনিক দিক দিয়ে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং একই সাথে রাজনৈতিকভাবে কার্যকর। অত্যন্ত বলিষ্ঠ এবং খোলাখুলিভাবে পরিচালক এই ছবিতে পাকিস্তানিদের গণহত্যা এবং পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনা তুলে ধরেন। জীবন থেকে নেয়া এবং স্টপ জেনোসাইড নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে যুক্ত হয় বক্তব্য এবং নির্মাণশৈলীর দিক থেকে শক্তিশালী ও সুনির্মিত দুটি ছবি, যা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকারদের জন্য দৃষ্টান্ত ও অনুপ্রেরণা হিসেবে বিদ্যমান। জহির রায়হান সেই সময় তাঁর সৃষ্টিশীলতার শিখরে ছিলেন। স্বাধীন দেশে বক্তব্যধর্মী ও নান্দনিক দিক দিয়ে উদ্ভাবনী ছবি তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের মান অনেক উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকা তিনি পালন করতে পারতেন। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র দেড় মাস পরই নিখোঁজ হয়ে যান সেই সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে খ্যাতিমান ও গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রকার। আমাদের চিন্তাসমৃদ্ধ চলচ্চিত্রের জন্য জহির রায়হানের অন্তর্ধান ছিল অপূরণীয় এক ক্ষতি।

১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি মিরপুরে জহির রায়হান কীভাবে নিখোঁজ হন, তিনি সেদিন মারা গিয়েছিলেন কি না, সেই সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের কয়েকদিন আগে তাদের এদেশীয় সহযোগী আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যেতে থাকে দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের। বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, কিন্তু চিন্তাশীলতার দিক থেকে নতুন দেশ যেন মলিন আর দুর্বল থাকে তাই বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার ভয়াল এক পরিকল্পনা করে পাকিস্তানি প্রশাসন আর তাদের এদেশীয় দোসররা। অনেক অধ্যাপক-সাংবাদিক-লেখক-চিকিৎসকের সাথে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জহির রায়হানের বড় ভাই বিখ্যাত সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক শহীদুল্লাহ্ কায়সারকে। ১৬ ডিসেম্বরের পর ঢাকায় বিভিন্ন বধ্যভূমিতে অনেক বুদ্ধিজীবীর ক্ষত-বিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া গেলেও শহীদুল্লাহ্ কায়সারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। যুদ্ধ শেষে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে আসার পর জহির রায়হান নিজের ভাইয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে খুবই উদ্বিগ্ন আর অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। বুদ্ধিজীবী হত্যা ও গণহত্যার তথ্য অনুসন্ধান এবং ঘাতকদের ধরার জন্য একটি তদন্ত কমিশনও তিনি গঠন করেন সেই সময়। জহির রায়হান ছিলেন এই কমিশনের চেয়ারম্যান।

বুদ্ধিজীবী অপহরণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে এই কমিশন অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে। এই সময়ই জহির রায়হান একদিন জানতে পারেন মিরপুরে বিহারি-অধ্যুষিত এলাকায় এক বাড়িতে শহীদুল্লাহ্ কায়সারসহ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীকে আটকে রাখা হয়েছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর আর মিরপুরে বিহারি সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ বসবাস করত। এই বিহারিরা বরাবরই পাকিস্তানিদের সমর্থন করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন তারা বাঙালিদের হত্যা আর নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর ভারতীয় সেনাসদস্যরা মূলত ঢাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। এরমধ্যে ঠিক হয়, ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে ভারতীয় সেনাসদস্যদের পরিবর্তে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর সদস্যরা মিরপুরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন। এর কিছুদিন আগেই জহির রায়হানকে তাঁর ভাইয়ের মিরপুরে বন্দি থাকার কথা জানানো হয়। প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশের পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে জহির রায়হানও ৩০ জানুয়ারি সকালে মিরপুরে গিয়েছিলেন। মিরপুরে জহির রায়হানের সাথে তাঁর কয়েকজন আত্মীয় থাকলেও সেনা কর্মকর্তারা কেবল জহির রায়হানকেই মিরপুরে অভিযানের সময় ঢোকার অনুমতি দেন। তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা জহির রায়হানকে রেখে ফিরে যান। সেদিন সকাল ১১টার দিকে মিরপুরে হঠাৎ বাঙালি সেনা আর পুলিশ সদস্যদের ওপর বিহারিরা ভারী অস্ত্র নিয়ে প্রচণ্ড হামলা চালায়। অপ্রস্তুত বাঙালি সেনা আর পুলিশ সদস্যরা সেই হামলা শক্তভাবে প্রতিরোধের সুযোগও পাননি। তার আগেই তাদের অনেকে প্রাণ হারান। অল্প কয়েকজন প্রাণ নিয়ে, আহত হয়ে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর ৪০ জন সদস্য সেদিন নিখোঁজ হন। পরে তাঁদের মৃতদেহও খুঁজে পাওয়া যায়নি। বোঝা যায়, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিহারি হামলাকারীরা তাদের মৃতদেহ লুকিয়ে ফেলে। জহির রায়হানের আর কোন খোঁজও সেদিন থেকে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় তিনিও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন আর তাঁর প্রাণহীন দেহও বিহারিরা লুকিয়ে ফেলেছিল। দেশের অন্যতম সেরা একজন সংস্কৃতি ব্যক্তিত্বের এমন করুণ পরিণতি ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক।

মিরপুরে বিহারিদের কাছে কী ধরনের অস্ত্র আছে এবং তারা তোটা সক্রিয় সেই ব্যাপারে সেদিন বাঙালি সেনা আর পুলিশ সদস্যদের কাছে সঠিক তথ্য না থাকার কারণেই তাদের এমন অতর্কিত হামলার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সেদিন মিরপুরে দায়িত্ব পালনকারী সেনাবাহিনী ইউনিট দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের কর্মকর্তাদের কথা অনুযায়ী জানা যায় সেদিন মিরপুর সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব ছিল পুলিশের। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন মিরপুরে কোনো অস্ত্র নেই। ৩০ জানুয়ারির আগে মিরপুরে নিয়োজিত ভারতীয় বাহিনীর সদস্যরাও বাঙালি সেনা আর পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন যে মিরপুরে বিহারিদের কাছে কোনো অস্ত্র নেই এবং সেখানে কোনো বিপদের আশঙ্কাও নেই। এমন তথ্যের ভিত্তিতেই বাঙালি পুলিশ আর সেনা সদস্যরা যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন না করে মিরপুরের মতো একটি বিশাল এলাকায় উপস্থিত হন। এমনকি যখন পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন বাড়ি থেকে বিহারিদের বের করে তাদের তল্লাশি করছিলেন তখনো বেশির ভাগ সেনা আর পুলিশ সদস্য খোলা জায়গায় কোনো সাবধানতা অবলম্বন না করেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের (ডি কোম্পানির) তৎকালীন ক্যাপ্টেন গোলাম হেলাল মোরশেদ খান (পরবর্তীকালে মেজর জেনারেল) সেদিন সেনাদলের নেতৃত্বে ছিলেন। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা বাঙালি সেনা আর পুলিশ সদস্যদের ওপর আশপাশের বাড়ির সুরক্ষিত অবস্থান থেকে হেভী মেশিন গান, লাইট মেশিন গানের মতো ভারী অস্ত্র দিয়ে অকস্মাৎ গুলিবর্ষণ শুরু হয়ে যায়। সেই ভারী অস্ত্রের প্রচণ্ড গুলিবর্ষণে অরক্ষিত অবস্থায় থাকা বাঙালি সেনা আর পুলিশ সদস্যরা গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ক্যাপ্টেন মোরশেদের ঠিক পাশে থাকা লেফটেন্যান্ট সেলিম এবং আরেকজন ল্যান্স নায়েক গুলিবিদ্ধ হন। সৌভাগ্যক্রমে ক্যাপ্টেন মোরশেদ গুলিবিদ্ধ হননি। তিনি পরে কয়েকজন সঙ্গীসহ দিনভর বিহারিদের সাথে গুলি বিনিময়ের পর গভীর রাতে অনেক কষ্ট করে আহত অবস্থায় পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।

সেদিন মিরপুরে উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন জীবিত সেনাসদস্যদের ভাষ্য থেকে জানা যায় পুলিশ আর সেনা সদস্যদের সাথে সেদিন তাঁরা অন্য একজন ব্যক্তিকেও সেখানে দেখেছিলেন এবং তাঁরা শুনেছিলেন যে তিনি একজন সাংবাদিক। বাঙালিদের মধ্যে কেবল তিনিই ছিলেন সিভিলিয়ান পোশাকে। ধারণা করা যায় তিনিই জহির রায়হান। এই সেনাসদস্যরা দেখেছিলেন বিহারিদের গুলিবর্ষণের ফলে অন্যদের সাথে সেই সাংবাদিকও গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। ১০০ জনের মতো বিহারি এরপর চিৎকার করতে করতে এগিয়ে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা বাঙালি পুলিশ আর সেনাসদস্যদের কোপানোর পর তাদের দেহ টেনে হিঁচড়ে দূরে নিয়ে যায়। সেই সাংবাদিকের দেহও এভাবে নিয়ে যেতে দেখেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী এই সেনাসদস্যরা।

কোনো অচেনা এলাকায় অভিযানের আগে সেই এলাকা সম্পর্কে সময় নিয়ে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত বেশি। কিন্তু দেখা যায় সেদিন বাঙালি সেনা আর পুলিশ সদস্যরা ভুল তথ্য পেয়েই মিরপুরে প্রবেশ করেছিলেন। ভারতীয়রা তাদের জানিয়েছিলেন মিরপুরে অবস্থানকারী বিহারিদের কাছে কোনো অস্ত্র নেই। কিন্তু পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চারটা ব্যাটালিয়ন মিরপুরে নিয়ে আসা হয় এবং মিরপুর অস্ত্রমুক্ত করতে দেড় মাস সময় লাগে। চার ট্রাক অস্ত্র মিরপুর থেকে উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে সাব মেশিনগান, লাইট মেশিনগান এবং হেভি মেশিনগান পর্যন্ত ছিল। প্রশ্ন ওঠে ভারতীয় সেনাবাহিনী কেন বাংলাদেশের পুলিশ আর সেনা সদস্যদের জানিয়েছিল যে মিরপুরের পরিবেশ নিরাপদ এবং সেখানে কোনো অস্ত্র নেই? ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১০ বিহার রেজিমেন্ট মিরপুরে নিয়োজিত ছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেই সময়ের কমান্ডিং অফিসার তৎকালীন মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী (পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল) উল্লেখ করেছেন, ১০ বিহার রেজিমেন্টের সদস্যরাও ছিলেন বিহারি এবং মিরপুরের পাকিস্তানপন্থী বিহারিদের সাথে ভারতের ১০ বিহার রেজিমেন্টের সদস্যদের ভাষা আর সংস্কৃতির কোন পার্থক্য ছিল না। এমন ধারণাও তাই তৈরি হতে পারে যে ভাষাগত আর সাংস্কৃতিক মিলের কারণে ভারতীয় বাহিনী মিরপুরের বিহারিদের প্রতি কঠোর আচরণ করেনি এবং সেই সুযোগে এই স্থানের বিহারিরাও বিপুল অস্ত্র তাদের কাছে রাখতে পেরেছিল। তবে মিরপুর অস্ত্রমুক্ত না করেই সেখানে অস্ত্র নেই এমন কথা যেমন ভারতীয় বাহিনীর বলা কোনোভাবেই উচিত হয়নি, তেমনি বাংলাদেশের সেনা আর পুলিশ সদস্যদেরও মিরপুরের পরিস্থিতি সম্পর্কে সময় নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা ছাড়াই ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে অসাবধানভাবে সেখানে প্রবেশ করা ছিল একটি বড় ভুল। সেই ভুলের জন্যই লেফটেন্যান্ট সেলিমের মতো অফিসারসহ মোট ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা সেনাসদস্য সেদিন মিরপুরে প্রাণ হারান এবং একই সাথে চিরদিনের মতো হারিয়ে যান জহির রায়হান। এই তথ্যটিও কারো জানা হয়নি সেদিন কার দেওয়া খবরের ভিত্তিতে জহির রায়হান মিরপুরের মতো বিপজ্জনক এলাকাতেই ছুটে গিয়েছিলেন নিখোঁজ বড় ভাইকে পাওয়া যাবে এই আশায়।

মিথ্যা তথ্য দিয়েই হয়তো জহির রায়হানকে সেখানে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। এবং যারা তাঁকে বিহারি-অধ্যুষিত মিরপুর যেতে বলেছিল তারা কি এই কথাও জানত যে সেদিন বাঙালি সেনা সদস্যরা যথেষ্ট তথ্য পাওয়া ছাড়াই মিরপুরে প্রবেশ করবে এবং তাদের ওপর হামলা করা হবে? ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি মিরপুরের সেই দুঃখজনক ঘটনাটি তাই কিছুটা রহস্যজনকও। তবে সেদিন মিরপুরে অভিযান পরিচালনার সময় যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হলে হয়তো স্বাধীন দেশে জহির রায়হানসহ এতজন মুক্তিযোদ্ধার প্রাণহানি ঘটত না।

তথ্যসূত্র :

জুলফিকার আলী মানিক, “মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন মিরপুর : জহির রায়হান অন্তর্ধান রহস্যভেদ,” সুবর্ণ : ঢাকা, ২০০২।

মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) বীরবিক্রম, ‘এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য : স্বাধীনতার প্রথম দশক’ মাওলা ব্রাদার্স : ঢাকা, ২০০০।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. তিন সন্তানের মা হতে চান জাহ্নবী কাপুর
  2. রাজনীতি ছেড়ে অভিনয়ে ফেরার ইঙ্গিত কঙ্গনার
  3. মাত্র ১৩ কোটিতে ‘মান্নাত’ কিনেছিলেন শাহরুখ, এখন দাম কত?
  4. সালমান মেয়েদের ভীষণ চোখে চোখে রাখতেন: সেলিনা
  5. ফের ‘বাহুবলী’ রূপে হাজির প্রভাস, প্রথম ঝলকেই আলোড়ন শুরু
  6. মা হচ্ছেন পরিণীতি চোপড়া
সর্বাধিক পঠিত

তিন সন্তানের মা হতে চান জাহ্নবী কাপুর

রাজনীতি ছেড়ে অভিনয়ে ফেরার ইঙ্গিত কঙ্গনার

মাত্র ১৩ কোটিতে ‘মান্নাত’ কিনেছিলেন শাহরুখ, এখন দাম কত?

সালমান মেয়েদের ভীষণ চোখে চোখে রাখতেন: সেলিনা

ফের ‘বাহুবলী’ রূপে হাজির প্রভাস, প্রথম ঝলকেই আলোড়ন শুরু

ভিডিও
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ৪৯
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ৪৯
আলোকপাত : পর্ব ৭৮৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৮৭
এই সময় : পর্ব ৩৮৭৫
এই সময় : পর্ব ৩৮৭৫
কোরআনুল কারিম : পর্ব ৬৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৬
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮৬
ছাত্রাবাঁশ পর্ব ৪৪
ছাত্রাবাঁশ পর্ব ৪৪
টেলিফিল্ম : প্রতারক
টেলিফিল্ম : প্রতারক
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৬০
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৬০
নাটক : ফুল প্যাকেজ
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২১৮

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x